• সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন

যেমন দেখেছি মান্নান ভূঁইয়ার রাজনীতি

admin / ৩৯১ Time View
Update : শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩

প্রয়াত বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান ভূইয়া

নূরুদ্দীন দরজী

জন্মের পর থেকেই শুনে আসছি মান্নান ভূঁইয়ার রাজনীতির কথা। নরসিংদীর আমাদের শিবপুর এলাকায় সেই শুরু থেকেই তিনি একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় আর গ্রহণযোগ্য রাজনীতিবিদ। এলাকার ছিলেন অত্যন্ত আপনজন। তাঁর শারীরিক অবয়ব, মুখমন্ডল, নাক চোখ, হাঁটাচলা সবকিছুই মিশে আছে শিবপুরের মাটিতে, আপামর জনগণের হৃদয়ে। তাঁর সহজ ও নির্বিঘ্নে চলাফেরা শিবপুরের সকল বাড়িতে। তিনি ছিলেন সকল বাড়ির আদরের সন্তান, সাদরে অতিথি। আমরা দীর্ঘ দিন বিদেশি বেনিয়াদের শাসন শোষণের যাঁতাকলে পিষ্ট ছিলাম। এ কারণে আগে থেকেই বাংলাদেশের মানুষের রাজনীতি করার জন্য বয়সের বাঁধাধরা তেমন কোন বিষয় বা নিয়ম ছিলো না। আবদুল মান্নান ভূইঁয়া ও অল্প বয়সেই রাজনীতি বুঝে উঠেছিলেন।
ভূঁইয়ার বয়স যখন ৯ বছর এবং দুলালপুর স্কুলের ছাত্র তখন দেশ ছিলো ভাষা আন্দোলনের জোয়ারে। ঐ অল্প বয়সে তিনি দুলালপুর স্কুলে অন্যান্য ছাত্রদের সাথে মিছিলে অংশ গ্ৰহণ করেন। বলতে গেলে তখন‌ থেকেই রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। আনুষ্ঠানিক রাজনীতি শুরু করেন ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে। নরসিংদী কলেজে পড়ার সময় থেকেই ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। কলেজ সংগঠনের আদর্শ তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির মাঝে দেখতে পেয়েছিলেন বলেই ছাত্র ইউনিয়ন করতে শুরু করেন। ক্রমান্বয়ে জড়িয়ে পড়েন ম‌ওলানা ভাসানীর আদর্শের সাথে। ভাসানীর তৎ সময়ের দল “ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি,তে যোগদান করেন। আবার ১৯৭৮, সালে কাজী জাফর আহমদ দ্বারা গঠিত ” ইউনাইটেড পিউপিলস পার্টি, তথা ইউপিপির সাধারণ সম্পাদক পদ অলংকৃত করেন। ১৯৮০ সালে সময় ও সুযোগ তাঁকে টেনে নিয়ে যায় বিএনপিতে।
হয়েছিলেন দলের মহাসচিব। দেশের প্রয়োজনে, দল ও রাজনীতির প্রয়োজনে অনেক‌ই মহাসচিব ছিলেন। কিন্তু মহাসচিব শব্দটি উচ্চারিত হলেই অনায়াসে মনে আসে আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার কথা। মানস চোখে ভেসে উঠে মান্নান ভূঁইয়ার মূর্ত ছবি। মহাসচিব কথাটি যেন তাঁকে ঘিরে একটি অমলিন ও অম্লান অবয়ব তৈরি করে ফেলেছে। মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইঁয়া।
একজন প্রতিবেশি হিসেবে তাঁকে যতটুকু দেখেছি,যতটুকু জানি আর এককালে যতটুকু সান্নিধ্য পেয়েছিলাম- তিনি ছিলেন যথেষ্ট ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। বড়কে শ্রদ্ধা করতে জানতেন,ছোটদের স্নেহ করতেন ও শিশুদের ভালোবাসতেন। চেষ্টা করতেন সুন্দর কাজগুলো সুন্দর অবস্থানে থেকে শেষ করতে। ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে কোন কাজ করতেন না। ব্যক্তিত্ব বিলিয়ে দেওয়া ছিলো তার জীবনের অভিধানের বাইরে। আর এ কারণে ক্ষমতার এক পর্যায়ে এসে তিনি কতিপয়ের বিরাগভাজন হয়তো হয়েছিলেন। কিন্তু আদর্শ থেকে এ পা ও বিচ্যুত হননি। তিনি আছেন সবার মাঝে আবদুল মান্নান ভূইঁয়া হয়ে- চিরদিন বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয় কোঠায় প্রিয় মান্নান ভূইঁয়া হয়ে। তাঁর আদর্শিক রাজনীতির ছোঁয়া মানুষকে এগিয়ে নিবে আদর্শের পথে। দল মত নির্বিশেষে মান্নান ভূঁইয়ার অমর স্থান অনেক উঁচুতে।
প্রিয় নেতা আবদুল মান্নান ভূইঁয়ার মৃত্যু বার্ষিকীর স্মরণে।

লেখকঃ সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category