• শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
মতামত: ভুয়া সাংবাদিকদের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে মর্যাদা : মীর আব্দুল আলীম আগামী বৃহস্পতিবার ইশা আন্দোলনের চক্রধা ইউনিয়ন শাখা সম্মেলন কখন সংস্কার শেষ করে নির্বাচন হবে সেটা জনগণ জানতে চায়— রিজভী আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য শিবপুর আসনে হাতপাখার প্রার্থী চূড়ান্ত নরসিংদীতে সাংবাদিকের উপর দুর্বৃত্তদের হামলা সরকারী নলকূপের জন্য আবেদন করা ৪৭ জনের টাকা জমা দেননি তাপসী রাবেয়া শিবপুরে ছেলের হাতে প্রাণ গেল মা’র শিবপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি গঠন নরসিংদীতে মে দিবসে পরিবহন খাতে প্রযুক্তি নির্ভর পরিবর্তনের আহ্বান আইয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার দাযিত্ব পেলেন স্বপন চন্দ্র সরদার

রবিবারের পাতা::::অণুগল্প: সংসার :: রচনায় : নূরুল ইসলাম নূরচান

admin / ৩৯৮ Time View
Update : রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩

অণুগল্প : সংসার

নূরুল ইসলাম নূরচান

‘সহজ-সরল সৎ মানুষটা এতটা কঠিন হলো কি করে?’ ভেবে কূল কিনারা পায় না তসলিমা বেগম। ঘটনাটি ঘটেছে আজ থেকে একমাস আগে। তার তেমন কোনো স্বজন নেই যে, বিষয়টি খোলসা করে বলবে। পাঁচ সদস্যের সংসার ছিল তাদের। বর্তমানে চলছে চার সদস্য নিয়ে। চার সদস্যের ভরণপোষণ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তসলিমা বেগম।

গত এক মাসের মধ্যে তসলিমার কাছে যা কিছু সঞ্চয় ছিল তা নিজের এবং ছেলে মেয়েদের পেছনে খরচ হয়ে গেছে। খরচ তো হবেই। কারণ, এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। তার উপর আবার সবকিছুই বাজার থেকে কিনে খেতে হয়। এখন কিভাবে সে সংসার চালাবে তা ভেবে পাচ্ছে না। এক কথায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন তিনি।

তাদের ভিটেবাড়ি ছাড়া চাষযোগ্য কোন জমিজমা নেই। তসলিমা বেগমের স্বামী লুৎফর রহমান ১৫ হাজার টাকা বেতনে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তাদের দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বাকি দুজনও পড়াশোনা করেন। তসলিমা বেগম গৃহিণী। এই ১৫ হাজার টাকায় তাদের সংসার কোনমতে চলে যাচ্ছিল।

বেশ কিছুদিন যাবৎ বড় ছেলে এবং মেয়ে বায়না ধরেছে, তাদেরকে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কিনে দিতে হবে। মোটামুটি ধরনের অ্যান্ড্রয়েড দুটি মোবাইল ফোন কিনতেও বেশ কিছু টাকা লাগবে। এদিকে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।

একদিন রাতে লুৎফর রহমান হতাশার গলায় তসলিমাকে বলল, ‘ছেলে মেয়েদের এসব আবদার আমি কীভাবে পূরণ করব?’ তসলিমা বলল, তাদের আবদার পূরণ না করেই বা উপায় কী!’

লুৎফর রহমান প্রতিদিন বাড়ি থেকে গিয়ে অফিস করতেন। প্রতিদিনের মতো সেদিনও সকালে বাড়ি থেকে গিয়ে আর ফিরে আসেন নি। লুৎফর এর কাছে একটি বাটন মোবাইল ফোন ছিল, সেটিও বন্ধ। আত্মীয়স্বজনদের বাসা বাড়িতে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। নাহ, কোথাও সন্ধান পাওয়া গেল না তাঁর।

এরপর একমাস অবধি বাড়িতে এক রকম শোকের মাতম চলছে। এর মধ্যে ছোট মেয়েটা সবচেয়ে বেশি কাতর হয়ে পড়েছে বাবার জন্য। কান্না জড়িত কণ্ঠে সে তার মাকে মাঝেমধ্যে বলেন, ‘মা, বাবাকে যেভাবেই হোক, যেখান থেকে হোক ফিরে আনার ব্যবস্থা কর। প্রয়োজনে আমি মানুষের বাসা-বাড়িতে কাজ করে বাবাকে খাওয়াবো।’

তবে ছেলে দুটোর মধ্যে কোন ভাবান্তর খুঁজে পান না তসলিমা।

ছোট মেয়ের মুখে এসব কথা শুনে তসলিমা আরো ভেঙ্গে পড়েছেন। মেয়েকে কি বলে সান্ত্বনা দেবে তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না তিনি।

তসলিমা বেগম এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন, তার স্বামী অবশ্যই ফিরে আসবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category