আসাদুজ্জামান আসাদ:
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া শিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ৩ মাস পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান (৭৫)। বুধবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান তিনি। ১ জুন বৃহস্পতিবার বাদ যোহর হারুনুর রশীদ খানের নিজ গ্রামের বাড়ী উপজেলার মজলিশপুরে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা নামাজ পূর্ব পরিবারের পক্ষ থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন হারুনুর রশীদ খানের ভাতিজা নরসিংদী-২ পলাশের এমপি আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, ছেলে আমীনুর রশীদ খান তাপস ও ভাতিজা সাবেক এমপি শহীদ রবিউল আওয়াল খান কিরণের ছেলে ফজলে রাব্বি খান। তারা তাদের বক্তব্যে হারুনুর রশীদ খানের হত্যাকারীদের বিচার দাবী করেন। জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন শিবপুরের এমপি জহিরুল হক ভূঞা মোহন, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক আবু নঈম মোহাম্মদ মারুফ খান, নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন, শিবপুরের সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, নরসিংদী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন, নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খান পোটন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী,নরসিংদী জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বশিরুল ইসলাম বশির, পলাশ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফ উল ইসলাম মৃধা প্রমুখ। জানাজা নামাজের পূর্বে হারুনুর রশীদ খানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়। রাষ্টীয় মর্যাদা প্রদান করেন শিবপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। এদিকে বুধবার হারুনুর রশীদ খানের মৃত্যুর খবরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শিবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়ক অবরোধ ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। বিকেলে শিবপুরের কলেজ গেইট ও ইটাখোলা মোড়ে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন তারা। সন্ধ্যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইটাখোলা মোড়ে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া মহাসড়কের কামারটেক, চৈতন্যা, সৃষ্টিঘর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়ও টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এসময় মহাসড়কের অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ২ ঘন্টা পর অবরোধ সরিয়ে নেয়া হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলা সদরের নিজ বাসভবনে দূর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হারুনুর রশীদ খান। এরপর রাজধানী ঢাকা ও দেশের বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
সবশেষ গত ১৯ মে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ারের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) তে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয় তার। শিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ভূঁইয়া রাখিল বলেন, প্রিয় নেতার মৃত্যুতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে। আমরা চাই এই নেতার হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচার হোক। হারুনুর রশীদ খান দীর্ঘ ২৫ বছর শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিরল দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বর্তমানে শিবপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ছিলেন।
উল্লেখ্য ১৯৮৬ সালে হারুনুর রশীদ খানের বড় ভাই সাবেক এমপি শহীদ রবিউল আওয়াল খান কিরণকেও সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। জানাজা শেষে হারুনুর রশীদ খানের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হবে।
#