• বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন

সৌদি ফেরত মিলন মিয়ার একমাত্র ভরসা বৃদ্ধ ‘ মা ‘

admin / ৪৩৩ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শেখ মানিক:

শত কষ্টের মাঝেও মা তার সন্তানকে আগলে রাখেন পরম মমতায়। ঝড়-বৃষ্টি, রোগ-ব্যাধি যা-ই হোক না কোনো, সন্তানের পাশে ছায়ার মতো থাকেন মা। তেমনিই এক মা ৬৫ বছর বয়সী আফরোজা বেগম। বয়সের কাছে শরীর হার মানলেও ছেলের প্রতি একটু মমতা কমেনি মায়ের। নিজেই ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। তারপরও সৌদি প্রবাস ফেরত ছেলে মিলন মিয়ার এই সময়ে তিনিই একমাত্র ভরসা।

গত ৪ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বাড়ৈগাও গ্রামে চানমিয়ার ছেলে মো: মিলন মিয়া (৫০) এর বাড়ীতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দেখা হয় এই মা-ছেলের সঙ্গে।

এলাকার কয়েকজন মুরুব্বী খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। গত ৭ মাস পূর্বে সৌদি আরবে প্যারালাইসিস হয়ে হাত পা অবশ হয়ে যায়। দেশে ফিরে কিছু দিন চিকিৎসা দেওয়া হলে বাড়ীতে নিয়ে আসেন তার স্ত্রী ইয়াসমিন।

অসুস্থ সৌদি ফেরত মিলন মিয়া জানান, আমি প্রায় ২৫ বছর সৌদিতে ১৪/১৫ ঘন্টা কাজ করেছি জীবনের শেষ সময় একটু সুখে শান্তিতে থাকার জন্য। বিয়ে করেছি ১৯ বছর, একটা সন্তান আছে আমাদের। বিদেশ থাকাকালীন সময় আমার টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করলে স্ত্রীর নামে লিখে নেয়। আমার ছেলে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কোন কিছু বলেনি। এবার অসুস্থ হয়ে দেশে আসার পরে কৌশলে আমার সেবা যত্ন, উন্নত চিকিৎসার কথা বলে জমি সহ প্রায় কোটি টাকার বাড়ী লিখে নিয়েছেন।

এখন সবকিছু লিখে নিয়ে আমাকে অমানবিক নির্যাতন চালায়। ঠিক মতন খেতে দে না, ঔষুধ এনে দেয় না, আমার মা, ভাই, বোনেরা আমার সেবা-যত্ন করতে আসলে তাদেরকে আসতে দেয় না। আমি আমার স্ত্রীর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ধুকে ধুকে মরতে চাই না। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে প্রস্রাব-পায়খানা পরিষ্কার করেন আমার মা।

অথচ বিদেশে থাকার সময় আমার বউয়ের কথায় মা,বাবা,ভাই বোন আত্মীয় স্বজন তাদের জন্য কোন কিছু করতে পারিনি। আমার অতি কষ্টের টাকায় নির্মিত এই বাড়িতে আমি আর থাকতে চাই না, আমি আমার মায়ের কাছে থাকতে চাই, আমাকে এখন থেকে বাঁচান। আমার ভাই স্কুল শিক্ষক বকুল আমার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে আসার কারণে তার বিরুদ্ধে দুটা মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখন সে মামলার ভয়ে বাড়ীতে থাকে না।

মিলনের বাবা চানমিয়া বলেন, আমার ছেলেকে এই যন্ত্রণা হাত থেকে মুক্ত করে দিয়ে যান। তাকে ঠিক মত খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হয়না। আমি তার চিকিৎসা করাবো। তার এই অবস্থা দেখতে কস্ট লাগে।

এ বিষয়ে তার স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, ডাক্তার বলছে এ রোগের আর কোন চিকিৎসা নেই, তাই বাড়িতে নিয়ে আসছি। জায়গা সম্পত্তি উনি নিজে ইচ্ছায় লিখে দিয়েছেন আমি জোর করে নেইনি।

এবিষয়ে চক্রধা ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) বেনজির আহমেদ জানান, ‘অসুস্থ প্রবাসী ফেরত মিলন মিয়া তার মা বাবার কাছে থাকতে চায়। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তার বাবা-মার কাছে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category