এইচএসসি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা তাদের ভবিষ্যতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। তাই সফলতার সম্ভাবনা বাড়াতে ও মানসিক চাপ কমাতে শেষ সময়ে কিছু কার্যকর প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। এ লেখায় থাকল এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শেষ সময়ের প্রস্তুতি হিসেবে কিছু পরামর্শ।
শাহ মো: সজীব
শিবপুর উপজেলায় এবছর (২০২৪ সনে) কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসা মিলিয়ে সর্বমোট ১৯০২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে। এরা তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিবে। যথা- ক) সরকারি শহীদ আসাদ কলেজ; খ) শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ ও গ) দুলালপুর সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা। এর মধ্যে কারিগরি পরীক্ষার্থীরা খ নং প্রতিষ্ঠানে থাকবে। পরীক্ষা শুরু হবে ৩০ জুন, ২০২৪ রোজ রবিবার সকাল ১০.০০ টা হতে।
এইচএসসি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা তাদের ভবিষ্যতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। তাই সফলতার সম্ভাবনা বাড়াতে ও মানসিক চাপ কমাতে শেষ সময়ে কিছু কার্যকর প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। এ লেখায় থাকল এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শেষ সময়ের প্রস্তুতি হিসেবে কিছু পরামর্শ।
পরিকল্পনা ও সময় ব্যবস্থাপনা:
সুসংগঠিত সময়সূচি তৈরি কর, যা প্রতিদিনের পড়াশোনা ও পুনরাবৃত্তি নিশ্চিত করবে। সময়সূচিতে প্রতিটি বিষয় ও অধ্যায়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় বরাদ্দ রাখবে। সঠিক পরিকল্পনা ও সময় ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে প্রতিটি বিষয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হবে।
পাঠ্যবই ও নোট:
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পাঠ্যবই ভালোভাবে পড়ার বিকল্প নেই। পাঠ্যবই সব সময় শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে মৌলিক ধারণা এবং তত্ত্ব প্রদান করে। তাই অধ্যায়ের মূল বিষয়গুলো নোট করে পড়া। প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, সূত্র ও ডায়াগ্রামগুলো আলাদাভাবে লিখে রাখতে পার। পরীক্ষার আগে দ্রুত পুনরাবৃত্তির জন্য নোট বেশ ভালো কাজে দেয়।
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা:
পর্যাপ্ত ঘুম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস শারীরিক ও মানসিক—উভয় ধরনের স্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি। তাই কেবল একটানা পড়াশোনা করলেই হবে না। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমাতেও হবে। পাশাপাশি পড়ার ফাঁকে সাময়িক বিরতি নিতে হবে। শরীর সতেজ রাখতে হালকা ব্যায়ামও করতে হবে। ব্যায়াম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খুব জরুরি, যা উচ্চ মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক। মনে রাখবে, সুস্থ শরীর মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
বিশেষ পরামর্শ:
নমুনা প্রশ্নপত্র:::::::
বছরের প্রশ্নপত্র এবং মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্র সমাধান কর। এর মধ্য দিয়ে পরীক্ষা ও প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে পার।
পুনরাবৃত্তি:::::::
প্রতিটি অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি কর। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেশি জোর দিয়ে পড়। প্রয়োজনে দুর্বল বিষয়গুলোর জন্য বেশি সময় দাও।
অনুশীলনমূলক পরীক্ষা::::::: নিজেকে যাচাই করার জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি করে পরীক্ষা দাও। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই পরীক্ষার সব প্রশ্নের সমাধান করার চেষ্টা করবে। এর মধ্য দিয়ে সময় ব্যবস্থাপনা ও চাপ সামলানোর দক্ষতা বাড়বে। পাশাপাশি পরীক্ষার বাস্তব অভিজ্ঞতাও তৈরি হবে।
মানসিক প্রস্তুতি:::::::
আত্মবিশ্বাস বজায় রাখ এবং সব সময় ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে পড়াশোনা কর। এ ক্ষেত্রে চাপমুক্ত থাকতে ধ্যান বা রিল্যাক্সেশন টেকনিক ব্যবহার করতে পার।
সহায়তা গ্রহণ::::::::
পরীক্ষার জন্য হাতে সময় খুব কম। এ সময় কোনো বিষয় বুঝতে অসুবিধা হলে কোনো দ্বিধা ছাড়া শিক্ষকের সাহায্য নাও। পাশাপাশি বন্ধু বা সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করেও সমস্যার সমাধান করতে পার। মূল কথা হচ্ছে, সমস্যা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নিজের পরীক্ষা খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
পরীক্ষা চলাকালে করণীয়::::::
পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর কোনো চাপ নেওয়া বা হতাশ হওয়া যাবে না। কোনো একটি পরীক্ষা খারাপ হলেও ভেঙে পড়বে না। এর বদলে বাকি পরীক্ষাগুলো সচেতনতার সঙ্গে ভালো দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
বিবিধ:
১. এডমিট কার্ড নিয়ে পরীক্ষার হলে আসতে হবে। কারেন্ট বিলের কপি নিয়ে আবার চলে এসো না।
২. আধা ঘন্টা আগে হলে প্রবেশ করতে হবে।
৩. রাস্তায় জ্যাম বা গাড়ি/অটো পাওয়ার বিষয় খেয়াল রেখো।
৪. অননুমোদিত কেউ পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারবে না। তাই আসবেন না।
৫. সকালে খাবার খেয়ে এসো।
৬. কলম, পেন্সিল, রাবার, ক্যালকুলেটর যা যা লাগে নিয়ে এসো। কেউ তোমায় দিবে না।
৭. নকল করা বা প্রক্সি দেয়ার চেষ্টা কল্পনায়ও মাথায় এনো না। দেখাদেখিও করা যাবে না।
৮. কক্ষ পরিদর্শকদের নির্দেশনা মানতে হবে।
৯. কোন কোন সাবজেক্ট তুমি নিয়েছো তা এডমিট কার্ডে আছে কিনা মিলিয়ে নাও।
১০. পরীক্ষার হলে পিন পতন নিরবতা বজায় রাখো।
১১. পরীক্ষা শেষ হলে সোজা বাড়ি চলে গিয়ে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিবে। বানিয়াদি ব্রিজ, কলেজ গেইট, উপজেলা পরিষদের মাঠ বা অন্য কোথায় আড্ডা দিও না।
১২. অভিভাবকগন এই পরীক্ষার সময়টা পরীক্ষার্থীদের বেশি যত্ন ও খেয়াল রাইখেন।
উপজেলা প্রশাসন, শিবপুর এর পক্ষ থেকে সকলকে নিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করি একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নকলমুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে। সকলের সহযোগিতা কাম্য।
লেখক:: শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।