শিক্ষক।যিনি হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর।একজন শিক্ষকের মাধ্যমে হাজার হাজার ছাত্র/ ছাত্রী মানুষের মতো মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে।ছাত্র বা ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষকের সর্ম্পক থাকে বন্ধুর মতো।মা ও বাবা শুধু মাত্র সন্তান জন্মদেয়।আর সেই সন্তানকে অমানুষ নয়, মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নিজের কাধে দায়িত্ব নেওয়ার মানুষটিই হচ্ছে শিক্ষক।ছাত্রকে মানুষ করতে গিয়ে শিক্ষক কখনো তাকে আদর করবেন আবার প্রয়োজন হলে শাসন করবেন।এটাই একজন শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য।কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখাযায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রকে শাসন করার অপরাধে ছাত্র বা তার অভিভাবক ধারা শিক্ষককে লাহ্নিত বা আক্রমন করা হয়েছে।যা কখনোই সভ্য জাতির জন্য কাম্য হতে পারে না।
আমি শিবপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ( সাবেক শিবপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়) ছাত্র ছিলাম।আমার অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের সময় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক যখন ছাত্রকে শাসন করতো আর এই কথা বাড়ীতে গিয়ে অভিভাবকের নিকট বললে তারা অনেক খুশি হতো।কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখাযায় এর বিপরীত।শিক্ষক যখন ছাত্রকে শাসন করেন আর এই কথা অভিভাবক জানলে সাথে সাথেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ্যাকশন শুরু হয়ে যায়।অভিভাবকের এ রকম আচরণ একজন ছাত্রের জন্য কতটুকু লাভবান হতে পারে তা আমার জানা নাই।
সম্পাদক ও প্রকাশক
সম্প্রতি শিবপুরের এমন একটি ঘটনা সবার নজর কেড়েছে। আইনুন তাজরি প্রভা। বয়স ১৩।উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের জয়মঙ্গল গ্রামের প্রবাসী ভুট্টর মেয়ে।সে শিবপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।বাবা ও মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে সে ছিল বড়। সেই হিসেবে বাবা ও মা’র আদরের সন্তান হওয়ায় প্রভার কোন ইচ্ছাই অপূরণ রাখেন নি তারা।তবে সন্তানকে যতটুকু শাসন করা দরকার ছিল তা তারা করেন নি।তাই প্রভা ছোট বেলা থেকেই হয়ে ওঠে বেপরোয়া ও উশৃঙ্খল।যার খেসারত দিতে হচ্ছে শিবপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকা বেগমকে।
আত্নহত্যা করা প্রভা’র উশৃঙ্খল ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণে পরিবার ও এলাকার মানুষ ছিল তার প্রতি ক্ষুদ্ব।গত ১লা সেপ্টেম্বর আইনুন তাজরি প্রভা ড্রেস কোড না মেনে শ্রেণীকক্ষে আসলে শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকা প্রভাকে শাসন করেন।ফলে শ্রেণীকক্ষ থেকে বের হয়ে ইদুরের ঔষধ খেয়ে শিবপুর থানায় গিয়ে কর্তব্যরত ডিউটি অফিসারের নিকট শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর ফ্লোরে ঢলে পড়ে প্রভা।পরে হাসপাতালে নিলে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রভাকে মৃত ঘোষণা করে। প্রভা এর আগেও বিষ পান করে আত্নহত্যার করার চেষ্টা করে।নিজের মেয়ে প্রভা উশৃঙ্খল চলাফেরা করার কারণে আত্নহত্যা করার পর শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি হয় নি প্রভার মা।কিন্তু মৃত্যুর পূর্বে নিজে থানায় অভিযোগ করার কারণে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ বাদী হয়ে শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।বর্তমানে নার্গিস সুলতানা পলাতক রয়েছে।
এদিকে গতকাল সোমবার ঘটনার চার দিন পর হঠ্যাৎ করে প্রভা’র মা সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষিকার বিচার দাবী করেছেন।নিজের মেয়ের উশৃঙ্খল ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণে আত্নহত্যা করার পর শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি না হলেও ঘটনার চার দিন পর বিচার দাবী করায় বিষয়টি জনমনে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।একজন শিক্ষক যদি ছাত্রকে সামান্যতম শাসন করার ক্ষমতা না রাখে তাহলে ছাত্র/ছাত্রীদেরকে কিভাবে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলবে একজন শিক্ষক।