আলো রিপোর্ট:
স্বঁপ্ন ছিল বড় হয়ে মানুষের মত মানুষ হওয়ার। পাশাপাশি সমাজে অন্যায়ের প্রতিবাদ সহ মানুষের সেবা করার।১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুস্খানের মহানায়ক শহীদ আসাদের ঘোষিত ১১ দফা মন কেড়েছিল তার।সেই ১১ দফা দাবী বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিল মো: আসাদুজ্জামান আসাদ। গণমানুষের অধিকার আদাই করতে গিয়ে, কেন প্রাণ দিতে হয়েছে আসাদ কে? এই প্রশ্নের উওর খুজতে জড়িয়ে পরে মাওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাপ’র সাথে। আর সেই মানুষটি হলেন শিবপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক কাদির কিবরিয়া। প্রবীণ এই রাজনৈতিক নেতা দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানাগেছে, কাদির কিবরিয়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার শিবপুর পৌরসভার নগর গ্রামের হাফিজ উদ্দিন মোল্লা’র ছেলে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনিই সবার ছোট ।১৯৬৪ সালের ১২ অক্টোবর জন্ম গ্রহণ করা কাদির কিবরিয়া ১৯৮০ সালে শিবপুর সরকারী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর শিবপুর সরকারী শহীদ আসাদ কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএ পাশ করেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন কারণে আর লেখাপড়া করা হয়নি তাঁর।
লেখাপড়া ও রাজনীতির পাশাপাশি নাটকের প্রতিও তিনি ছিলেন আকৃষ্ট।সেই কারণেই ১৯৭৭ সালে সর্বপ্রথম গরীবের আর্তনাত নাটকে নায়িকার ছোট ভাই ‘ সুজন ‘চরিত্রের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন । সুজন চরিত্রের মাধ্যমে অভিষেক হলেও বহু নাটকে নায়কের অভিনয় করেছেন। তিনি একজন সাংষ্কৃতিক প্রিয় মানুষ।
১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত একটি নাটকের চিত্র.
১৯৬৯ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের সাথে তিনিও রাজপথে আন্দোলন করেছেন। রাজনীতিতে একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে ন্যাপ’এ যোগ দিলেও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন তিনি। প্রথমে জাতীয় পার্টিতে গুরুত্বপূর্ণ কোন দায়িত্ব না পেলেও নিজের মেধা ও সততার মাধ্যমে বর্তমানে তিনি উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।অবশ্য এর আগে জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক কাদির কিবরিয়া শিবপুরের আলো ২৪ ডট কম’কে বলেন — ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারী আসাদকে হত্যা করার পর তার রক্ত ঝড়ার বিষয়টি আমি মেনে নিতে পারিনি।গণ মানুষের ১১ দফা দাবী আদাইয়ের জন্য আন্দোলন করা আসাদকে কেন প্রাণ দিতে হবে? এই জন্যই রাজনীতিতে যোগ দেই আমি। অসহযোগ আন্দোলনের পরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পর মাওলানা ভাসানীর ন্যাপ ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেই আমি।
১৯৮৩ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর নতুন বাংলা ছাত্র সমাজ ও জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করেছিলাম। সেই থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত জাতীয় পার্টিতেই আছি।জীবনের বাকি সময়টুকু জাতীয় পার্টিতেই থাকতে চাই। আমি রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে জন্য। রাজনীতি করলেও সাংষ্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে আমার ছিল সংশ্লিষ্টতা।তাই রাজনীতি করলেও নাটকের সাথে জড়িয়ে পরি।সুজন চরিত্রের মাধ্যমে নাটকে অভিষেক হলেও বহু নাটকে আমি নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছি। শতেক খানেক নাটকে রয়েছে আমার অভিনয় । রাজনীতির পাশাপাশি উপজেলা মানবাধিকার ও পরিবেশ সোসাইটি উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য এবং গীতিনাট্য পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি’র সদস্য হিসেবে কাজ করছি। ভবিষৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে তিনি বলেন —বর্তমানে যেই রাজনীতি চলছে তা হচ্ছে টাকার খেলা। টাকা নাই ত কিছুই নাই। বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে রাজনীতি করতে যেই টাকার দরকার তা আমার কাছে নাই।আমার তেমন কোন পরিকল্পনা মার নাই। রাজনীতির জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।হোক তা বৈধ বা অবৈধ।আমি যেহেতু অবৈধ টাকাকে ঘৃণা করি, সেই কারণেই আমার কাছে টাকা নাই। আমার কাছে অবৈধ টাকা না থাকলেও আমি মানুষের কল্যাণে জীবনের বাকি সময়টুকু কাজ করে যেতে চাই।