নিজস্ব সংবাদদাতা :
ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং এ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার জনজীবন। প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। এতে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের। গরমের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস করতে কষ্ট হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বিদ্যুৎনির্ভর ব্যবসায়ীরাও। সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং করা হয় গ্রামাঞ্চলে। উপজেলায় ৫০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ হচ্ছে ২০ মেঘাওয়াট।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত জুন মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ ভালো থাকলেও এখন প্রতিদিন লোডশেডিং হচ্ছে প্রায় ১৮-২০ ঘণ্টা। রাতে প্রায় ৬-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুতহীন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণের। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। ঘেমে জ্বর-কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। বাদ যাচ্ছেন না বয়স্করাও।
আনোয়ার নামের এক গ্রাহক জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে বাচ্চাদের পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে বাচ্চাদের পড়াশোনার সময়টিতে বিদ্যুৎ থাকেনা। অভিযোগ নম্বরে ফোন দিলেও কাজ হয় না।
শিবপুর সদরের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, সকাল থেকেই বিদ্যুৎ নেই। ছাত্ররা যেমন ঘেমে একাকার, শিক্ষকদের অবস্থাও ভিন্ন নয়। ক্লাসরুমে পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ ব্যতীত এভাবে সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম ও খামখেয়ালীপনা।
আফরোজা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছিনা। অনিয়ন্ত্রিত এ লোডশেডিং ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে লোডশেডিংয়ের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
শিবপুর সদরের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংকটও চরমে। ফলে তেলের ওপর নির্ভর করে আমাদের মতো যে সব প্রতিষ্ঠান চলছে সেগুলো লোকসানের মুখে। কারণ ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে তো সারাদিন জেনারেটর চালিয়ে কাজ করা সম্ভব না।
নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর শিবপুর জোনাল অফিসের এজিএম মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘উপজেলায় চাহিদা রয়েছে ৫০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের। আমরা পাচ্ছি ২০ মেঘাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।’