ডানপাশ থেকে: আত্বগোপনে থাকা পুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এলিস আহমেদ সানী ও যশোর ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল সরকার। জেল হাজতে রয়েছেন বাঘাব ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ সরকার ও জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান নাদিম সরকার।
♦আলো রিপোর্ট ♦
স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মধ্যে চারজন চেয়ারম্যানই বিভিন্ন মামলায় রয়েছেন জেলে ও আত্বগোপনে । এর মধ্যে সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ( স্বতন্ত্র) নাদিম সরকার ও সাবেক আ.লীগ নেতা বাঘাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ( স্বতন্ত্র) জাহিদ সরকার আছেন জেল হাজতে ।
উপজেলার ইটাখলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় গত ২৯ নভেম্বর জাহিদ সরকার ও গত ১০ ফেব্রুয়ারী নাদিম সরকার’কে গ্রেফতার করে শিবপুর মডেল থানা পুলিশ । অপরদিকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী পুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এলিস আহমেদ সানী ও যশোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল সরকার আছেন আত্বগোপনে। চক্রধা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আরিফ উল ইসলাম মৃধা ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় চক্রধা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন ইউপি সদস্য (মেম্বার) বেনুজির আহমেদ বেনু। যশোর, পুটিয়া, বাঘাব ও জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায কার্যক্রম চলছে ভারপ্রাপ্ত বা প্যানেল চেয়ারম্যান দিয়ে।
ডানপাশ থেকে:: মাছিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হারিস রিকাবদার, সাধারচর ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদ আহমেদ, আয়ুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, দুলালপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামীম মোল্লা, চক্রধা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ বেনু।
জানাগেছে, একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত শিবপুর উপজেলা। মামলা জনিত কারণে ২০০৩ সালের পর থেকে মাছিমপুর, চক্রধা ইউনিয়ন ও শিবপুর পৌরসভার কোন নির্বাচন হচ্ছে না। তাই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী পুটিয়া, আয়ুবপুর, জয়নগর, সাধারচর, দুলালপুর, যশোর ও বাঘাব ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৫ম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ঘোষনা অনুযায়ী গত ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আয়ুবপুর থেকে মজিবুর রহমান, পুটিয়া থেকে এলিস আহমেদ সানী, যশোর থেকে রাসেল সরকার আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ( নৌকা মার্কা প্রতীক) নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। অবশ্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মরহুম হারুন অর রশীদ খানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন ছিল তাদের প্রতি। অপরদিকে ততকালীন স্হানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহন ও সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সমর্থনে জয়নগর ইউনিয়ন থেকে (স্বতন্ত্র ) নাদিম সরকার, বাঘাব ইউনিয়ন থেকে (স্বতন্ত্র) জাহিদ সরকার ও সাধারচর ইউনিয়ন থেকে (স্বতন্ত্র) মোর্শেদ আহমেদ আ.লীগের দলীয় মনোনীত ( নৌকা মার্কা প্রতীক) চেয়ারম্যান প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তারা । এরা তিন জনই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ধায়ে আওয়ামীলীগ থেকে ( দলীয় আদেশ অমান্য করে নির্বাচনে আ’লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায়) বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। দলীয় ভাবে বিএনপি সারাদেশে ইউপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করলেও দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শামীম মোল্লা আ. লীগের দলীয় মনোনীত ( নৌকা মার্কা প্রতীক) প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচীব আবুল হারিস রিকাবদার মাছিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে যশোর ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল সরকার ও পুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এলিস আহমেদ সানীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।
নয় ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে চারজনই জেল ও আত্বগোপনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শিবপুর শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহিম মীর শিবপুরের আলো ২৪ ডট কম’কে বলেন –— এটা তাদের কৃতকর্মের ফল।