স্হানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের ঘর ছাড়া, কোমরে রশি বেধে মুক্তিযোদ্ধাকে কোর্টে প্রেরণ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ খানকে সন্ত্রাসীরা গুলি করার পর তার মৃত্যু, থানার পাশেই বর্তমান এমপির রাজনৈতিক কার্যালয় রাতের আধারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা, কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি, মাদকের ছয়লাব সহ এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে শিবপুরে। আর এই সময়ে শিবপুর মডেল থানার ওসি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ফিরোজ তালুকদার।
আবুনাঈম রিপন,স্টাফ রিপোর্টার::
মো: ফিরোজ তালুকদার।যার বিপি ৬৯৯৫১১৯৭৫৪।তিনি ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর নরসিংদী থেকে বদলী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আগামী ৭ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত্ব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে গত রবিবার (১০/১২/২০২৪) রায়পুরা থানায় বদলী করা হয়েছে তাকে। সেই হিসেবে তিনি ৩৫৫ দিন শিবপুর মডেল থানায় অফিসার ইনর্চাজ ( ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে অনেক অঘটন ঘটেছে শিবপুরে।যা এর আগে কখনো দেখেনি শিবপুরবাসী। বিএনপি নেতাদের ঘর ছাড়া, কোমরে রশি বেধে মুক্তিযোদ্ধাকে কোর্টে প্রেরণ ও আওয়ামীলীগের অভিভাবক হারুনুর রশীদ খানকে সন্ত্রাসীরা গুলি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হওয়ার মতো অনেক ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও মাদকের ছয়লাব ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বন্ধে তিনি ছিলেন ব্যর্থ। এমনটাই মনে করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতাসহ স্হানীয় সাধারণ জনগণ।
জানাগেছে, ওসি ফিরোজ তালুকদার দায়িত্ব গ্রহণ করার মাত্র কয়েক দিন পর গত ১০ জানুয়ারী তার নির্দেশে ধানুয়াস্থ নিজ বাসা থেকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ রিকাবদার কে নাশকতার মামলায় গ্রেফতার করে মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতার করে থানায় নেওয়ার পর বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য অনেক চেষ্টা করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি শহীদ হারুনুর রশীদ খাঁন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিএনপি নেতাকে ছাড়তে রাজি হয়নি ওসি ফিরোজ তালুকদার। পরে ১১ জানুয়ারী সকালে কোমরে রশি বেধে কোর্টে প্রেরণ করে বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতাকে। কোমরে রশি বাধার খবর জাতীয় ও স্হানীয় পত্রিকায় গুরুত্বসহ কারে প্রকাশ করে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারী সকালে শিবপুর মডেল থানার পূর্ব পাশে নিজ বাসায় সন্ত্রাসীরা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ খাঁনকে গুলি করে বীর দর্পে চলে যায়। ৯৪ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ ব্যাপারে শিবপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হলেও ঘটনার অন্তরালে যারা জড়িত তাদের কাউকে ধরতে পারে নি থানা পুলিশ।
গত ১৪ মার্চ দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা উপজেলা আ’লীগের অস্থায়ী ও বর্তমান এমপির ব্যক্তিগত কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।পরের দিন ১৫ মার্চ সন্ধায় আরিফুল ইসলাম মৃধাকে আটক করে থানা পুলিশ এবং রাতে আরিফ মৃধাকে প্রধান আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে পৌরসভার আশ্রাবপুর গ্রামের মো: সেলিম ভূঁইয়া।আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া পরিষদের সদস্য সচীব ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচীব আরিফুল ইসলাম মৃধা কে ২২ মার্চ জামিন দেয় আদালত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি নেতা শিবপুরের আলো ২৪ ডট কম’কে বলেন —- আমি দীর্ঘ সময় ধরে বিএনপির রাজনীতি করি।কিন্তু বদলি হওয়া ওসি ফিরোজ তালুকদারের আমলে আমরা যেই পরিমানে নির্যাতনের শিকার হয়েছি বিগত সময়ে তা কখনো হয়নি। থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করায় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ঘর ছাড়া হতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়াও বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে থানায়।